গোলাম মোস্তফা সারওয়ার, হালুয়াঘাট প্রতিনিধি,
ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বারের একমাত্র সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, অবসর প্রাপ্ত ওয়ারেন্ট অফিসার (আর্মি) নূরুল ইসলাম বাদল অদ্য রাত ১০:৪০মি. (১৪.১০.২০২১) ঢাকা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ইন্তিকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল সত্তর। আজ বিকেল ৩ ঘটিকায় শিমুলকুচি ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা গার্ড অব অনার শেষে জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম বাদল ১৯৫০ সালের ৫ ডিসেম্বর গফরগাঁও উপজেলার পাঁচুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ভাষা শহীদ আব্দুর জব্বার ও মাতা আমেনা বেগম। ভাষা আন্দোলনে আব্দুর জব্বার শহীদ হওয়ার এই পরিবারটি হালুয়াঘাটে স্থায়ীভাবে চলে এসে গাজিরভিটা ইউনিয়নের শিমুলকুচি গ্রামে তারা বসবাস শুরু করেন। নূরুল ইসলাম বাদল তখন ৪/৫ বছরের শিশু। হালুয়াঘাটের শিমুলকুচি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার পড়াশুনার হাতেখড়ি। গফরগাঁও উপজেলার কান্দিপাড়া হাইস্কুল থেকে মেট্রিক পরীক্ষা দেন এবং ফুলপুর কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট শেষ করেন।
নূরুল ইসলাম বাদল ব্যক্তি জীবনে একজন স্বাধীন ও দৃঢ় চেতা ব্যক্তি। পিতার প্রেরণায় দেশকে উজ্জ্বল করার জন্য দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়েছেন। ভাষা আন্দোলনে পিতা শহীদ হওয়ার পর তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের কাছে এই পরিবারটি কালো তালিকাভুক্ত ছিলো। তিনি ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্র থাকাবস্থায় যুদ্ধ শুরু হলে ১১ নাম্বার সেক্টরে কর্ণেল তাহেরের অধীনে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। একজন গেরিলা কমান্ডার হিসেবে তেলিখালী, বান্দরঘাটাসহ কয়েকটি সম্মুখ যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন। একাত্তরের সেই উত্তাল দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করে “বায়ান্নর রক্তে একাত্তরের রণাঙ্গন” একটি বই রচনা করেছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম বাদল বসবাস করতেন রাজধানীর তেজগাঁও থানার তেজকুনি পাড়ায়। নূরুল ইসলাম বাদলের দুই মেয়ে, এক ছেলে। বড় মেয়ের নাম লুৎফুন নাহার শোভা ও ছোট মেয়ে আফরোজা খাতুন রোভা। ছেলের নাম ফারজুল ইসলাম বিজয়। দুই মেয়েই বিবাহিত। ছেলে এখনও পড়াশুনা করছে।
ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বারের একমাত্র সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, অবসর প্রাপ্ত ওয়ারেন্ট অফিসার (আর্মি) নূরুল ইসলাম বাদল’র মৃত্যুতে হালুয়াঘাট আমরা শোকাহত ও মর্মাহত। আমরা মরহুমের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা, আত্মার শান্তি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।